করোনার চার বছর পর নতুন করে মহাপ্রাদুর্ভাবের আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এইচএমপিভি (হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস)। চীন ও মালয়েশিয়ার পর এবার ভারতেও দেখা দিয়েছে এই ভাইরাস। দেশটির কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে তিন ও আট মাস বয়সি দুই শিশুর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রথমে আট মাস বয়সি এক শিশুর শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত হয়। পরে তিন মাস বয়সি আরেক শিশুর শরীরেও ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। তবে তাদের পরিবারের সাম্প্রতিক কোনো ভ্রমণের রেকর্ড নেই।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আক্রান্ত শিশুদের শরীরে যে স্ট্রেন পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে চীনে ছড়ানো স্ট্রেনের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। বর্তমানে তিন মাস বয়সি শিশুটি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তবে আট মাস বয়সি শিশুটি এখনও চিকিৎসাধীন।
পর পর দুটি সংক্রমণের খবর জানার পর কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এদিকে রাজ্যবাসীকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব হর্ষ গুপ্তা।
এইচএমপিভি ভাইরাস চীন থেকে যাতে করোনার মতো ভারতে ছড়িয়ে না পড়ে, তাই আগে থেকেই সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ভারত জানিয়ে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অতুল গয়াল বলেন, শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কোনো সমস্যা এখন থেকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। এ ধরনের জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, এইচএমপিভি একটি সংক্রামক রোগ এবং যেভাবে এটি ছড়ায়, তার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে কোভিডের। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিডের মতোই হাঁচি, কাশি, আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান, করমর্দন এবং স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় এ রোগটি।
এইচএমপিভি ভাইরাসের কোনো ওষুধ বা টিকা নেই। চীনের যেসব হাসপাতালে এইচএমপিভি রোগীরা ভর্তি হয়েছেন, তাদের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ ব্যবহার না করে প্রচলিত ওষুধই দেওয়া হচ্ছে।
তবে, রোগটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এর প্রতিরোধের সঙ্গে করোনা বা কোভিডের প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাদৃশ্যও রয়েছে। রোগটি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো হলো— নিয়মিত দিনে কয়েকবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং কোনো কিছু স্পর্শ করার পর হাত ভালোভাবে ধোয়া এবং শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে অবস্থান করা।